সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০১৭

সাধের সময় যায় বিফলে

আষাঢ় মাসের ভরা নদী, নয়া গাঙ্গের পানি,
বন্ধু তুমি থাকতে যদি খেলতাম নাউ দৌড়ানি।
পূবাল হাওয়ায় মনের সুখে,
গান ধরিয়া পাল উঁড়িয়ে।
জল-তরঙ্গে নাচত হিয়া আসতো যৌবন গতি,
ডুব-সাঁতারে ক্লান্ত হইতাম মন চাইতো যখনি।

পূবাল বাতাস গাঙে তুলে উতাল-পাতাল ঢেউ,
যৌবন সুখে নাচছে পানি একবার দেখে যেও।
তোমার তরে মনটা অবুঝ,
হৃদয় জুড়ে প্রতীক্ষা সুখ।
কষ্ট-প্রহর মনের ব্যথা বুঝল না হায় সে-ও,
বসন্ত দিন যায় ফুরিয়ে নেয় না খবর কেউ!

কত সাধের এই দুনিয়া! মনের মানুষ ছাড়া,
স্বপ্ন শোকে নির্ঘুম রাত, চোখে শ্রাবণ ধারা!
ঝাপসা লাগে পূর্ণিমা চাঁদ,
গাঁয়ের লোকে দেয় অপবাদ!
অহংকারী আমি নাকি! কারো সাথে মিশি'না,
বোকা-নির্বোধ অনেকে বলে সেতো তার ছেড়া!

কল্প আশায় স্বপ্ন বুনি করবো বসত সুখে
রাখছি কতই ভালোবাসা এই হৃদয়ে পুষে।
দুজন মিলে বাঁধিব ঘর,
ওই পরাণে রাখি অন্তর।
নিত্য-প্রহর তারই ছবি আমার দুটি চোখে,
সাধ মিটে'না একলা ঘরে মরছি প্রেম বিষে।

ঢেউয়ের মত বারে বারে মনে পড়ে বন্ধুরে,
সুখস্মৃতিতে কষ্ট বাড়ে বসলে নদীর পাড়ে।
নাইরে কোথাও সুখের দেখা,
প্রাণের বন্ধু সে-ও বোঝে না!
সাধের সময় যায় বিফলে বন্ধু অনেক দূরে,
মরব যেদিন কাঁদবে সেদিন আসবে তুমি ফিরে।

রবিবার, ৩০ জুলাই, ২০১৭

এইতো জীবন!!

বাজান, গত দুপুরবেলা অল্প কিছু ভাত খেয়েছিলাম দক্ষিণ পাড়ার সোলায়মানদের ঘরে। রাতে বাড়িতে গিয়ে দেখি আমার কুড়ে ঘরের মেজে পানি, চুলা পানির নিচে। রাতে আর পাক করে খাওয়া হয়নি। বাড়ি ফেরার সময় পথে পাওয়া একটা পানির বোতলে কলিমদের টিউবয়েল থেকে পানি নিয়ে গিয়েছিলাম। তাই পেটপুরে খেয়ে রাত কাটিয়েছি। কতবাড়ি পার হয়ে এলাম, কারো কাছে দু মুঠো ভাত চাইতে সাহস করিনি। এখন বড্ড অসহ্য লাগছে, তাই এখানে বসতে চেয়ে পড়ে যাই, উঠতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে শুয়েছিলাম এখানেই। চলে যাচ্ছি বাবা। এই বলে সত্তর ঊর্ধ্ব শীর্ণকায় শরীরের বৃদ্ধটি পাশে থাকা লাঠিতে ভর দিয়ে দাঁড়াতে চেষ্টা করতেই আবারো পড়ে যায়। জীবন হাত বাড়িয়ে চেষ্টা করেও বৃদ্ধ ভিক্ষুকটিকে পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে পারলো না। পড়ে যাওয়া বৃদ্ধের হাত আর পাজর ধরে কোনরকম তুলে বসায় তার চেয়ারে।

আপনে বসেন বাবা, আমি দেখি আপনাকে কিছু খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারি কিনা। ক্ষুধার্ত ছলিমউদ্দিনের মুখে সামান্য হাসি অনুভূত হল জীবনের কথা শুনে। জীবন বাড়ির ভিতর গিয়ে তার বউকে বলে কোনরকম একথাল ভাত আর তাদের খেয়েদেয়ে বেশি হওয়া তরকারি নিয়ে বাহিরে এল। জীবনের পিছুপিছু তার মেজো ছেলে একটা বস্তা নিয়ে দাঁড়ায়। জীবন ছেলের কাজে খুশি হয়ে ছেলেকে চুমা দিয়ে বস্তাটি মাটিতে পেতে ভিক্ষুক চাচাকে ধরে সেখানে বসিয়ে বলে, চাচা, আমারা কিছুক্ষণ আগেই খেয়েদেয়ে যা ছিল তাই আপনার জন্য এনেছি। আপনি একটু কষ্ট করে খান চাচা। বৃদ্ধার মুখে হাসি ফোটে উঠে। হ্যা বাবা, খাবো, মন ভরে খাবো, আল্লাহ্ তোমার ভালো করুক। বৃদ্ধ ছলিমউদ্দিন ভাত খাচ্ছে। জীবন আর তার ছেলে পাশে বসে দেখছে। কি ক্ষুধার্ত! মুহুর্তেই একথাল ভাত খেয়ে ফেললো! চাচা, আপনার ছেলে মেয়ে নাই? জীবনের প্রশ্নে ছলিমউদ্দিনের চোখে হতাশার ছাপ, দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে, বাবারে, ছেলেমেয়ে ছিল, এখন নেই!
তারা কোথায় চাচা?
তারা এখন বড় হইছে, শহরে থাকে। একটামাত্র ছেলে আমার। খুব কষ্টকরে ছেলেকে লেখাপড়া করিয়েছিলাম। মানুষের বাড়িতে কাজ করে, ভিক্ষে করে ছেলেকে উচ্চশিক্ষিত করার চেষ্টা করেছিলাম। ছেলে, খুউব শিক্ষিত হয়েছে। বড় চাকরি করে, শহরে থাকে, গাড়িতে চড়ে। কিন্তু বাবা...! কথাটুকু বলে বৃদ্ধের কেমন যেন উদাসী অবস্থা। চোখে মুখে হতাশার ছাপ, অতৃপ্ত মনের ক্ষোভ দুঃখ যেন চোখবেয়ে নামতে চাইছে। কোনরকম নিজের চোখ মুছে ছলিম উদ্দিন বলে, আর মেয়ে মাশাল্লাহ্ ভালো ঘরে বিয়ে হয়েছে। তার জামাই বিদেশে চাকরি করে। মেয়েকেও সাথে নিয়ে গেছে বিদেশে। তোমার চাচী মারা যাবার পর ওই হাওড়ে একজনের পতিত জমিতে কোনরকম একটা শুয়ে থাকার ব্যবস্থা হয়েছে।
বৃদ্ধের কথা শুনে জীবন স্তব্ধ হয়ে গেল। ছেলে উচ্চশিক্ষিত, মেয়ে বড়বাড়িতে বিয়ে হয়েছে, সে আবার অন্যের বাড়িতে মাথাগোঁজার ঠাই পাইছে! জীবনের মাথায় কিছু ঢুকছে না। তাই আবারো প্রশ্ন করে, চাচা, ছেলের বাড়ি যেতে পারেননা?
গিয়েছিলাম বাবা! দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো।
তয়, আপনার এমন পরিস্থিতি কেন? একটু বিস্ময়ের সাথেই প্রশ্ন করে জীবন।
বাবারে, ভাবছিলাম ছেলের চাকরি হলে আমাদের বুড়াবুড়ির কপালে সুখ হইবো, কিন্তু হয় নাই বাবা! আমরা গ্রামের মুর্খ মানুষ, বয়স হয়ে গেছে। আমরা বাসায় থাকলে ছেলের বউয়ের সাথে ছেলের রোজই ঝগড়া বাঁধে। অনেক কটুকথা শুনেও ছিলাম। কিন্তু, যখন আমাদের বৃদ্ধাশ্রমে রাখার ব্যবস্থা করলো ছেলে, তখন আর থাকতে পারিনি। বৃদ্ধাশ্রম না গিয়ে ওই গাঁয়ে এসে দুইজনে পুরনো দিনের মতো জীবন কাটাতে থাকি। রোগে শোকে বুড়িটিও আমাকে ছেড়ে চলে গেল গতবছর। আমি আর এখন আগের মতো হাটতে পারিনা বাবা। কেমন যেন অসহ্য লাগে, খুব হাফিয়ে উঠি। সারাদিন মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরে যা পাই, তা কোনরকম পাকিয়ে খেয়ে শুয়ে থাকি। এখন আর পাকও করতে পারিনা ঠিকমতো। তাই মাঝেমধ্যে না খেয়েই থাকতে হয়। কত মানুষ মরে যাচ্ছে, আমার মরণ আল্লাহ্ কেন দিচ্ছে না বুঝি না! কথাগুলো বলতে বলতে বৃদ্ধের চোখ জলে ভরে উঠেছে। চোখ মুছে জীবনের মাথায় হাত বুলিয়ে 'বেঁচে থাকো বাবা, আল্লাহ্ তোমার ভালা করবেন' বলে লাঠিতে ভর দিয়ে চলে যাচ্ছে বৃদ্ধ ছলিমউদ্দিন। বয়স্ক লোকের এমন করুণ কাহিনী শুনে কখন যে নিজের চোখেও জল গড়িয়ে পড়ছে তা টেরই পায়নি, জীবন নীরবে বৃদ্ধের চলে যাওয়া দেখছে, আর মনে মনে ভাবছে.... এইতো জীবন!!

বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই, ২০১৭

মিষ্ট মুখের মুচকি হাসি

মিষ্টি মুখের মুচকি হাসি আমি বড় ভালোবাসি।।
এজীবন ছাড়তে পারি ছাড়বো না যে তোকে।
এই অন্তরে-
রাখবো তোকে খুব যতনে থাকবি জনম ধরে।।

হাসলে তোর দুই-গালে পড়ে সুন্দর দুটি টোল,
তাইনা দেখে হারাই আমার মনের যতো বোল।।
অবাক চোখে মুগ্ধ মনে।। শুধুই চেয়ে থাকিরে।
এই অন্তরে-
রাখবো তোকে খুব যতনে থাকবি জনম ধরে।।

তুই-যে আমার সন্ধ্যা বাতি পূর্ণিমার ওই চাঁদ,
আপন করে পাইলে মানবো হাজার অপবাদ।।
দেখতে হাসি তোর মুখে।। জীবনটা দিবো লিখে।
এই অন্তরে-
রাখবো তোকে খুব যতনে থাকবি জনম ধরে।।

বুধবার, ২৬ জুলাই, ২০১৭

আমাকে নিয়ে সনেট লিখেছেন

সনেট কবি বলেছেন: 

কবি নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন

প্রেমপথে আছে কত কন্টক বিস্তর
সে সকল পায়ে দলে প্রেমের উত্থান
ঘটে সব প্রেমিকের অন্তর সাম্রাজে,
তা’বিভাবে? জানা যায় কবির কথায়।
কালে কালে কত প্রেম দেখেছে জগত
হে নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন হে কবি
কবিতার ক্যানভাসে অনিন্দ সুন্দর
এঁকেছেন আপনি সে প্রেমর ভূবন।

প্রেমিকায় পড়ে দৃষ্টি প্রেমিক মনের
কি বেহাল উন্মাদনা কি চিত্র উদ্ভব
হয়ে থাকে, ফুটে সেটা কবিতা বৈচিত্রে।
দক্ষহাতে সে চিত্রের হয়েছে ধারক
দক্ষ এক কারিগর এ কবি নয়ন,
পাঠকের অন্তরেতে সুপ্রিয় সবার।

আমাকে নিয়ে অনেক সুন্দর সনেট লিখেছেন প্রিয় সনেট কবি ফরিদ আহমদ চৌধুরী। কৃতজ্ঞতা প্রশংসায় এই আন্তরিক প্রাপ্তির প্রকাশ সম্ভব নয়। অন্তরে থাকবেন তিনি প্রেরণার জ্যোতি হয়ে। আকাশ ছোঁয়া উৎসাহ আর প্রেরণা দিয়েছেন কবি, আমি উচ্ছ্বসিত, আনন্দের শিখরে।

আপনার এই স্নেহ ভালোবাসা আশীর্বাদ যেন কভু না হারাই এমন প্রত্যাশা সৃষ্টিকর্তায়।

এর উত্তর আমি কিভাবে বলবো প্রিয় কবি! পুড়তে পুড়তে যে নিঃশেষ সবি! এ আমি, আমি নই তারই প্রতিচ্ছবি। সাত বছরের জমানো প্রেম ভেঙেছিল একদিনে! স্তব্ধ হই তখনি, যখন দুচোখে ভেসে উঠে তার মুখোচ্ছবি।

শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা জানবেন সবসময়।

মঙ্গলবার, ২৫ জুলাই, ২০১৭

ভাবনায়

কর্ম ব্যস্ত দিনটি শেষে রাত্রি যখন বাড়ে,
মনের ঘরে অস্থিরতা স্মৃতির পাতা নাড়ে।
দুচোখ বুজে হারান সুখ সময় গুলো ভাবি,
হৃদয় জুড়ে তোমারি নাম চন্দ্র মুখের ছবি।

জানিনা তো কোথায় তুমি কিবা এখন কর,
তুমিও কি আমার মতো এমনি ভাবে পুড়ো।
চৈত্র খরা মন ভূমিতে চোখ ভাসে শ্রাবণে,
কেমনে থাকো বন্ধু তুমি হয়না কিরে মনে!

মুক্ত আকাশ মিষ্টি বিকেল তোমার কূলে মাথা,
অনেক সুখে ব্যস্ত দুজন বলতে মনের কথা।
মিষ্টি ও'মুখ দেখে আজো জীবন পাবে প্রাণ,
মিলবে ছন্দ সব কবিতায় ভরবে সুরে গান।

রাত্রি জেগে পূর্ণিমা চাঁদ দেখবো মনে আশা,
ভ্রমর হয়ে খুঁজবো মধু তোমার ভালোবাসা।
দুনিয়া জুড়ে তুমিই প্রিয় সুন্দর গোলাপ ফুল,
মাতাল রবো তোমার প্রেমে করবো কত ভুল।

কতো গভীর ভালোবাসা তোমার জন্য ছিল,
স্বপ্ন সুখের দিনগুলো সব ব্যথায় ভরে গেল।
যেদিন থেকে সব ভুলিয়া তুমিও গেলে দূরে,
ঘুম হারাল সেদিন থেকে আর আসেনা চোখে।

মিষ্টি সুখের ভালোবাসায় ভরবে আমার ঘর,
অনেক দিনের স্বপ্ন চাওয়া এই বুকের ভিতর।
করলে বিফল আশার স্বপন পর হলে পাষাণী,
প্রতি রাতের ভাবনায় তবু মিশেই আছো তুমি।

রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০১৭

হারিয়ে যাওয়া মানুষ গুলোকে আবার আমি খুঁজছি -মোস্তফা সোহেল

হারিয়ে যাওয়া মানুষ গুলোকে
আবার আমি খুজছি,
হারিয়ে যাওয়ার ব্যাথাটাকে
আবার আমি বুঝছি।।
যে হারিয়ে যায়-
সে তো আর আসে না ফিরে।।
জীবনের পদচারনায় সেতো শূন্য,
সেতো শূন্য- সেতো শূন্যই থেকে যায়।।

এখন আর রাত জেগে হয়না দেখা 
ওই আকাশের চাঁদ তারা,
জীবন আমি আর ভাবতে পারিনা
কিছুতেই তুই ছাড়া।।
তুই ছাড়া মন আমার ভরা শুধু শূন্যতায়।
সেতো শূন্য- সেতো শূন্যই থেকে যায়।।

কতনা প্রহর আমার কেটেছে
শুধুই তোর জন্য,
ভাবতে পারিনি এই জীবনে
তুই ছাড়া কিছু অন্য।
শেষমেস জীবন আমার ভরা শুধু শূন্যতায়।
সেতো শূন্য- সেতো শূন্যই থেকে যায়...।।

হারিয়ে যাওয়া মানুষ গুলোকে
আবার আমি খুজছি,
হারিয়ে যাওয়ার ব্যাথাটাকে
আবার আমি বুঝছি।।
যে হারিয়ে যায়
সে তো আর আসে না ফিরে।।
জীবনের পদচারনায় সেতো শূন্য,
সেতো শূন্য- সেতো শূন্যই থেকে যায়।।

শনিবার, ২২ জুলাই, ২০১৭

কেমন আছো বন্ধু.... গান : নয়ন

কেমন আছো বন্ধু....?
মনে কি হয় না আমায় একটিবার !!
অথচ কথা ছিল, আসুক বাঁধা যতো,
তুমি আমি কখনো নই হারাবার।।
কেমন আছো বন্ধু, জানিয়ে যেও শুধু,
নাই'বা নিলে তুমি খবর আমার।।

এইতো সেদিন তুমি মিথ্যে অভিমানে,
পেরিয়েছ চিরতরে আমার সীমানা।
কতদিন মাস গেল বছর যুগের পরে
অর্ধ যুগ! তোমার চাঁদমুখ দেখিনা।।
প্রতিটি প্রহর জুড়ে, কতটা কষ্টে পুঁড়ে
নিঃস্ব মন! না থাকুক কেউ দেখার।
কেমন আছো বন্ধু, জানিয়ে যেও শুধু,
নাই'বা নিলে তুমি খবর আমার।।

কতনা ব্যাকুল ছিলে দেখতে আমাকে,
বিশ্বাস সুখ স্বপ্ন ছিল তোমাতে জমা।
সুখের ভুবন আমার ডুবছে অন্ধকারে
দুঃখবোধ! সেদিন থেকে কেউ বোঝেনা।।
এভাবে কতদিন, সুধী প্রেমের ঋণ
কষ্ট-প্রহর, বড় সাধ জাগে জানার।
কেমন আছো বন্ধু, জানিয়ে যেও শুধু,
নাই'বা নিলে তুমি খবর আমার।।

শুক্রবার, ২১ জুলাই, ২০১৭

সূরা আসর

বাংলা উচ্চারণঃ
(১) ওয়াল আসর

(২) ইন্নাল ইনসানা লাফি খুসর

(৩) ইল্লাল-লাজিনা আমানু 
ওয়ামিলুছ ছালিহাতি 
অতাওয়া ছাওবিল হাক্কী 
অতাওয়া ছাওবিছ ছবর।

বাংলা অনুবাদঃ
(১) কসম সময়ের

(২) নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত

(৩) তাঁরা ব্যতীত, যারা ইমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে
এবং পরস্পরকে হকের (সত্যের) দাওয়াত ও ছবরের উপদেশ দিয়েছে।

সংগ্রহ ঃ নাবিক সিনবাদ  'সামহোয়্যার'

বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০১৭

বড় ভুল- ও দুঃখ বুঝার মানুষ নাই (গান)

বড় ভুল- করেছিলাম তোমায় ভালোবেসে

স্মৃতির পাতা মেলে, মনের দোয়ার খুলে,
তোমার মুখোচ্ছবি দেখছি।
শুভ্র মেঘের ডানায়, ভেসে ভেসে আজো আমি,
তোমার ছবিটি আঁকছি।।
তুমি পূর্ণিমা-চাঁদ হয়ে, আকাশ আলো করে,
আমার দিকে চেয়ে হাসো।
মুক্ত ঝরা হাসি, কত যে ভালোবাসি,
তুমিও কি আজো ভালোবাসো।
কত সুখের দামে, গেলে আমায় ভুলে...!! 
মিলেনা সে হিসেব কোনভাবে...!
বড় ভুল- করেছিলাম তোমায় ভালোবেসে!!

নীরব রাত্রে ওগো খুলে বাতায়ন,
আকাশ জুড়ে দেখি তোমার কিরণ।।
মনের রাজ্য জুড়ে, তুমিই রূপের রাণী...।।
সুখের ছোঁয়া আজো অনুভবে...।
বড় ভুল- করেছিলাম তোমায় ভালোবেসে !!

শূন্যতা ঘিরে আজ আমার জীবন,
এর চেয়ে ভালো যদি হয় গো মরণ।।
কতভাবে কতদিন, আমার বুকে মিশে...।।
বেঁচে থাকার স্বপ্ন-আশা দিতে...!
বড় ভুল- করেছিলাম তোমায় ভালোবেসে!!

____

দুঃখ বুঝার মানুষ নাই

আমি যার কাছে যাই বলবো দুঃখ!!
সবাই বলে সময় না-ই!
কর্ম মন্দ, কপাল পুঁড়া
দুঃখ বুঝার মানুষ না-ই!!

ছিল আমার সুখের একটা ঘ-র
ভালোবাসায় পূর্ণ ছিল
দুই জনার অন্তর।।
শূন্য ঘরে একলা আমি।।
চোখের জলে বুক ভাসাই!

বন্ধু যদি হইত গো আমা-র
পূর্ণিমাচাঁদ বইত ঘরে
থাকতো না অাঁধার।।
সেই-তো ছিল সন্ধ্যা বাতি।।
সুর করে ডাকতো কানাই।

বইছে বুকে কালবৈশাখী ঝ-ড়
কি বুঝিয়া পাষাণ বন্ধু
করলো আমায় পর।।
নয়ন বলে থাকবে তুমি।।
মিশে আমার কলিজ্বায়।

এই গানটির সুর মিলাতে না পারায় নিচের কবিতাটির জন্ম হয়েছিল।

মনের মানুষ কোথায় পাই

আমি বলবো কি আর 
কার কাছে যাই!! 
সব লোকে কয় সময় নাই!
বুকের ভিতর জ্বলছে আগুন
মনের মানুষ কোথায় পাই!!

ছিল আমার সুখের একটা ঘর
ছিল ভালোবাসায় পরিপূর্ণ 
স'দায় দুই অন্তর।। 
শূন্য ঘরে একলা আমি...।।
চোখেরজলে বুক ভাসাই।
বুকের ঘরে জ্বলছে আগুন
মনের মানুষ কোথায় পাই!!

বন্ধু যদি হইতো-গো আমার
পূর্ণিমারচাঁদ থাকতো ঘরে
মুছিত সব আঁধার।।
সেই'তো ছিল সন্ধ্যা-বাতি।।
মনসুখে ডাকতো কানাই। 
বুকের ঘরে জ্বলছে আগুন
মনের মানুষ কোথায় পাই!!

হৃদয় জুড়ে কাল-বৈশাখী ঝড় 
কি বুঝিল প্রাণের বন্ধু
করলো আমায় পর।।
নয়ন বলে থাকবে তুমি।।
মিশে রক্তকণিকা'ই।
বুকের ঘরে জ্বলছে আগুন
মনের মানুষ কোথায় পাই!! 

শুক্রবার, ১৪ জুলাই, ২০১৭

ভগবান আল্লাহ্ ঈশ্বর

শুনরে আহম্মকের দল তোর নিজের খবর রাখ,
কেন অন্যকে করতে বশ্য সামনে ধর্ম দাঁড় করাস!
সেতো যারযার পূজনীয় শ্রদ্ধেয় অন্তরের বিশ্বাস,
তুইতো মানুষ খোদা নোস কেন মনের খবর চাস!

ধর্মের দোহাই দিয়ে কেন মানুষে করিস বিভাজন,
সবার আগে মানুষ সত্য, মমতায় করে-নে স্বজন।
মানুষের মাঝে আছে তোর ভগবান আল্লাহ্ ঈশ্বর,
স্রষ্টাকে খুঁজতে যাবি কোথা ধর-রে তুই মানুষ ধর।

মিছেই করিস'না ভণ্ডামি ধর্মকর্ম মনে শিহরন,
মানুষ স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি উত্তম বিচার বিচরণ।
মানুষে রাখিস ভালবাসা দশে করবে অনুসরণ,
মানবিক গুণাবলী ধ-র সবুজ রাখ অন্তর মন।

খোদার মহব্বতে মানুষ ভুলে করিস তুই আঘাত,
প্রথম পরিচয় ভুলিস সামনে আনিয়া ধর্ম-জাত!
খুঁচা মেরে পরের বিশ্বাসে লুকাস তুই নিজ স্বভাব,
পুষা জানোয়ার যেন তুই মানুষকে কুপাস পুড়াস।

তোদের মত ভণ্ড ধার্মিক যুগে যুগে নিস কত প্রাণ,
তিলকে তাল করিস তরা বাড়াস সমাজে ব্যবধান
ধর্ম লড়াইয়ে কত মা'র শূন্য বুক আজো রক্তপাত
এইকি ধর্মের ফল ভবে মিথ্যে যুদ্ধে দিতে হয় জান

আয়রে তোরা রাখ বিশ্বাস ধর্মের শক্তিকেন্দ্র অন্তর
মানুষের মাঝে প্রেম খোঁজ সৃষ্টিতে স্রষ্টা পাবি খবর
প্রিয়র প্রিয়কে বাস-ভালো শ্রদ্ধা রাখ মনের ভিতর
মানুষের মাঝে পাবি জানি ভগবান আল্লাহ্ ঈশ্বর।

যেমনি ছিলাম আগে

যখন নীরব, নিঝুম রাত্রির
গভীরতা বাড়ে ধীরেধীরে, 
নিকষকালো আঁধারের চাদরে ঢাকা
আমার চারিদিক; 
অন্ধকার ছাপিয়ে
একটা দুটি তারা জ্বলে ঐ আকাশে,
ঝলসান হৃদয়ের গন্ধে মাতাল
ছোটে চলি দিক্বিদিক।

মাটির বুকচেরা রোদ্দুর,
ডাহুকীর চিৎকারে কাঁপে বুক,
বিরহতাপে পাথর অন্তর 
ধূপের ধোঁয়ার মত উঁড়ছে মন;
ঘুরেছি দ্বারেদ্বারে সন্ধ্যা সাজে
কোথাও মিলেনি আশ্রয়,
মিলেনি শান্তি,
পারিনি হতে ল্যাম্পপোষ্টের মতো স্থির! 

অশাসনীয় হৃদয়ের অস্বস্তিকর সময়
যাচ্ছে কেটে দিনযামিনী, 
মহাপ্রলয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়ানো
আমার ভবঘুরে  জীবনব্যাপী;
নিঃসঙ্গতা আর একাকীত্বে গড়া
আমি ধূমকেতু-নক্ষত্রপতি,
জ্বলছি শূন্যময় রাতের আকাশে
সহস্রাধিক বছর নীরবচারী। 

কত আকুতি, মিনতি ভরা নয়নে
তৃষ্ণার্ত নিবেদন কতজনে,
কেউ বোঝেনি, বলেনি পথিক
এসো স্বপ্নে মোর ঘুমো-ঘরে;
যুগের পথে চলেছি একাই
তবুও দিন যায় রাত্রি আসে-ফিরে, 
নির্ঘুম সকাল, হইনা অবাক নিজ দেখে
যেমনি ছিলাম আগে। 

বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৭

মাত্রা শিক্ষা


নয়ন ভাই, শুধু আপনার জন্য এ কবিতাটার ছন্দ নিয়ে সামান্য আলোচনা করি। এটা মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত। প্রতি মূল পর্বে ৬ মাত্রা আছে, এবং কোনো কোনো স্থানে ৪ মাত্রার একটা অতিপর্ব আছে।

তুমি কাছে এলে / ভালো থাকি আমি -- প্রতি পর্বে ৬ মাত্রা
যতখানি ভালো / থাকা যায় -- ১ম পর্ব ৬ মাত্রা, ২য়টি ৪ মাত্রার অতিপর্ব
এই পৃথিবীর / সবটুকু মায়া -- প্রতি পর্বে ৬ মাত্রা
শুষে নিয়ে তুমি - ৬ মাত্রা
আমার কপোলে / প্রেম দাও - ৬ মাত্রা/ ৪ মাত্রা

কী যে ভালো লাগে - ৬
কী যে ভালো লাগে / তোমার চুলের / সুগন্ধি - ৬+৬+৪
কতটা জীবন / পার করে দিই- ৬+৬
বহতা নদীর / সীমান্তে - ৬+৪

কিন্তু সর্বত্র মূল পর্ব বা অতিপর্বের মাত্রাসংখ্যা ৬/৪ বজায় রাখা সম্ভব হয় নি; অর্থাৎ, ছন্দের দিক থেকে কবিতাটি ত্রুটিপূর্ণ। এটা হয়েছে এ কারণে যে লিখবার সময় আমি মাত্রা গুনে লিখি নি, শুধুমাত্র ছন্দপতন ঠেকিয়ে লিখেছি। ত্রুটিপূর্ণ জায়গাগুলো দেখুনঃ

তুমি এসেছিলে / হঠাৎ করেই ৬+৬ (ৎ-কে একমাত্রা ধরেছি, যদিও সচরাচর এটাকে গোনা হয় না)
বিরান গ্রীষ্মে / বৃষ্টি নিয়ে ৬+৫ (২য়টি অতিপর্ব না, মূল পর্ব)
জানি না আমার / কী হয়েছিল ৬+৫ (২য়টিও মূল পর্ব)
হঠাৎ জীবন / উঠলো জেগে ৬+৫ (২য়টিও মূল পর্ব)

তুমি চলে গেছো / সাথে নিয়ে গেছো ৬+৬
সকল আলো, সবখানি প্রেম ৫+৬
তুমি না থাকলে / আমিও থাকি না ৬+৬
জ্বলেপুড়ে হই বিনিঃশেষ ৬+৫ (এখানে ঃ-কে একমাত্রা ধরা হয়েছে; এটাকেও ৎ বা ং-এর মতো শূন্য মাত্রা ধরা হয়)

এই মাত্রাসংখ্যা এখন ঠিক করতে গেলে কবিতার গতিশীলতা ব্যহত হতে পারে, অনুপযুক্ত শব্দ হয়ত চলে আসতে পারে, যাতে কবিতাটি আড়ষ্টতাপূর্ণ বা আর্টিফিশিয়াল হয়ে যেতে পারে (এখনই যে কবিতা হয়েছে, তা অবশ্য দাবি করছি না)।

আপনার ছন্দজ্ঞান খুব ভালো, আপনার কবিতা পড়লেই বোঝা যায়। গতকাল গদ্যকবিতা সম্পর্কে আমরা আলোচনা করছিলাম, এটাকে তার ধারাবাহিক অংশ হিসাবে ভাবা যেতে পারে। এটাতে কোনো অন্ত্যমিল না থাকলেও এটা গদ্যকবিতা না। এটা মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত কবিতা।

(সোনাবীজ বা ধুলোবলি ছাই ভাইয়ের প্রতিউত্তর)

গাড়ি চালানোর সময় অন্যমনস্ক থাকা একদম উচিৎ নয়

আজ মনটা বেশি ভালো মনে হচ্ছিল না। কেমন যেন অস্বস্তিকর মনে হচ্ছিল সবকিছু। কিছুই ভালো লাগছিল না। রাতে ঘুমোতে প্রতিদিন দেরি হয়ে যায়। ফেসবুক, টুইটার, গুগলি, ব্লগ আর নিজের সাইট ঘুরতে ঘুরতে রাতের প্রায় একটা দুটা প্রায় বাজে শুইতে। কোনকোন রাতে চারটাও বেজে যায়, অনেক রাত সকাল হয় নেটে ঘুরতে ঘুরতেই। গতরাত প্রায় সাড়ে চারটার দিকে মোবাইল অফ করে শুয়েছিলাম। সকাল বারোটার দিকে ঘুম থেকে উঠে মুখ ব্রাশ করে গোসল করে পেটে ক্ষুধা থাকার পরও ভাত ভালো লাগছিল না। অল্প কিছু খেয়ে হাত ধোয়ে বসে থাকি। একটা সিগারেট ধরিয়ে বউকে বললাম একটু চা খাওয়াবেন (বউকে মাঝেমধ্যে আমি আপনে করেই ডাকি)। বউ চা করে দিলে চা খেয়ে প্যান্ট আর গেঞ্জি পড়ে বের হই বাসা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে।

গাড়িটি নতুনই পায়, এখনো বছর পার হয়নি। আমার আগের গাড়িটি বেশি ভাঙাচোরা হয়ে গিয়েছিল। তাই সেটা বিক্রি করে এই গাড়িটি কিনেছিলাম মাস দুই আগে। গাড়িটি মিটারবক্স ডিজিটাল। কম দামি গাড়ি হলেও গাড়িটি চালিয়ে খুব ভালোই লাগে। নিজের কষ্টের টাকায় কেনা তাই খুব সাবধানেই চালাই। আজও সাবধানেই চালাচ্ছিলাম। মনটা খারাপ থাকায় মাঝেমধ্যে গতি বেপরোয়া হয়ে যেতো। পরক্ষণেই আবার গতি কমিয়ে চালাচ্ছি। বাসার পশ্চিম দিকের রাস্তা দিয়ে বের হয়ে ধোপাঘাট ব্রিজে গিয়ে উঠলাম। ব্রিজ পর হয়ে কড়ই গাছ পার হয়ে নাজিরাগাড়ার কাছাকাছি যেতেই গতি তেমন ছিল না, এই ৪০ থেকে ৫০ এমন গতিতেই যাচ্ছি। সামনে অনেকগুলো মহিলা রাস্তার দুই পাশ দিয়ে হাটছে। আমার গতিও তখন একটু কমেছে, যেহেতু দুই পাশ দিয়ে হাটছে সেহেতু অত কমনার প্রয়োজন মনে হয় নি। মাথায় একটু চিন্তা ছিল, মনে মনে ভাবছি গ্রামের বাড়ি দিয়ে ঘুরে আসবো। তাছাড়া মফিজুলের সাথে দেখা করতেই হবে। খুব রোদ ছিল আকাশে। তাই চোখে চশমা ছিল। এই সেই ভেবে ভেবেই চালাচ্ছিলাম গাড়ি।

হঠাৎ হাতের বাম পার্শ্বে একটা পিচ্চি মেয়ে সাত আট বছরের হবে হয়তো। হর্ণ বাজাতেই পিচ্চি মেয়েটি দৌড় দিল, ভাবলাম যাক, বামেই থাকবে, আমি একটু ব্রেকে চাপদিয়ে ডান দিক দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি, হঠাৎ মেয়েটি দিক পরিবর্তন করে রাস্তার এপাশ থেকে ডান দিকে দৌড় দিয়েছে, ততক্ষণে গাড়ির একদম সামনে। হাইড্রোনিক ব্রেক আর পিছের ব্রেক একবারে ধরেও আর হল না। গাড়ি ছেছড়ে গিয়ে মেয়েটির সাথে গাড়ির আগার চাক্কা বাজলো, মেয়েটি মাটিতে পড়ে গেল, আমার গাড়িও পড়ে গেল আমার উপর। গাড়ি সহ আমিও অল্প ছেছড়ে গেলাম হয়তো। মেয়েটির জন্য টেনশন হচ্ছিল কিন্তু, লাগলোই শেষ পর্যন্ত। আমাকে স্কুল ফেরত ছেলে গুলি টেনে তুললো। মেয়েটিকে পাশের মহিলারা কুলে তুলে নিয়েছে। মেয়েটি কাঁদছে। আমি কোনরকম উঠে মেয়েটির কাছে গেলাম মাথায় হাত দিয়ে বলছি মা কোথায় ব্যথা পেয়েছো। পাশের মহিলারা বলছে বাপু তুমি চলে যাও, এখানে থাকলে নানাজনে নানা কথা বলবে, তোমার কোন দোষ নেই, আমরা তো দেখলামই। তুমি খুব চেষ্টা করেছো দেখেছি। দেখলাম মেয়েটির তেমন ক্ষতি হয়নি, সামান্য ছাল উঠেছে। আমার বাম হাত কেটে রক্ত পরছে, ডান হাতের কয়েক যায়গায় ছাল উঠে গেছে। সখ করে কিনা স্ট্রিজ পেন্টটি হাটুর ওখানে ছিড়ে গেছে ঘষা লেগে পাক্কার সাথে। মনে হয় অনেক টুকু ছাল গেছে হয়তো, পেন্ট থাকায় ঠিক দেখা গেল না, তবে বুঝা যাচ্ছিল বেশ, সবচেয়ে বেশি ব্যথা পাচ্ছিলাম বাম পায়ের পাতায়। আমি হাটতে পারছিলাম না। তবুও ছাত্রদের সহযোগিতায় গাড়ি তুলে সেল্ফে স্টার্ট দিয়ে চলে আসলাম সেখান থেকে। গাড়ির তেমন ক্ষতি হয়নি। তবে ডিজিটাল মিটারের বারোটা বেজে গেছে। লাইট বক্স ফেটে গেছে। পরে অমনি গ্রামে গিয়ে ঘুরে এসে এখন বাসায় শুয়ে আছি।

তখন বাম পায়ের পাতায় ব্যথা কম মনে হলেও, এখন প্রচণ্ড ব্যথা করছে। সম্ভবত পায়ের পাতার হাঁড় ফেটে থাকবে হয়তো, ঠিক বুঝতেছি না। বাসায় আসার পর বউ অনেকক্ষণ পানি ঢেলে দিল পায়ের পাতায়, শরসে তেল মালিশ করে দিল, একটা মলম লাগিয়ে এখনো মালিশ করছে। মাঝে ছেলেও অনেকক্ষণ পাতা মালিশ করে গেল। বাম পায়ের হাটুতে অনেকটুকু ছুলে গেছে, খুব বেশি ব্যথা লাগছে পাতায়। পায়ের পাতায় ভর দিতে পারছিনা। শরীর কাঁপছে, জ্বর উঠছে মনে হচ্ছে। একটা নাপা খাইলাম।

যা হোক, আল্লহ্ বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে বাঁচিয়েছেন এটা অনুভব করছি। আমার দোষ যদিও নেই তবুও আমার কাছে মনে হচ্ছে দোষ আমারও কিছুটা ছিলই। যদি মানসিক অবস্থা ভালো থাকতো, একটু সাবধান থাকতাম তো এমনটা হতো না। আল্লাহ্ মেয়েটিকে বাঁচিয়েছে। নয়তো যদি মেয়েটির মাথায় আঘাত লাগতো তো মরেও যেতে পারতো। যেভাবে পড়েছিলাম তাতে আমার বাম পা ভেঙেও যেতে পারতো। গাড়ির ডিজিটাল মিটার বক্স ফেটে গেছে, যাক, তবুও আমি বেঁচে আছি মেয়েটির তেমন ক্ষতি হয়নি এখানেই শুকরিয়া মহান স্রষ্টায়।

তাই, গাড়ি চালানোর সময় ১০০% মন গাড়িতে রাখে চলাই ভালো। নয়তো দুর্ঘটনা অনেকটা নিশ্চিত। অন্যমনস্ক হয়ে গাড়ি না চালিয়ে কিছুক্ষণ দোকানে বসে, চা খেয়ে আবার না হয় গাড়ি চালানো যেতে পারে। গাড়ি চালানোর সময় মন হাজির রাখুন, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনাজনিত কারণ এড়িয়ে চলুন। সবার জন্য শুভকামনা সবসময়।