সোমবার, ৩০ জুলাই, ২০১৮

মিথ্যাচারে দেশপ্রেম ও উন্নয়ন চেপে রাখা সম্ভব নয়

দেশ ভারতের কাছে বিক্রি করে দিবে আওয়ামী লীগ' এই মিথ্যে প্রোপাগান্ডা এখন আর বিশ্বাস করেনা বাংলার জনগণ। এখন আর বোকা ভাববেন না বাংলার মানুষকে। মিথ্যাচার আর প্রোপাগান্ডায় বাংলাদেশের উন্নয়ন চেপে রাখতে পারবেননা। আপনি স্বীকার না করলেও জনগণের চোখে দৃশ্যত আওয়ামী লীগ সরকারের দেশপ্রেম ও উন্নয়ন।

শুনেছি সত্তরের নির্বাচনে নির্বাচনের আগে মসজিদের ইমাম'রা নৌনায় করে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হিন্দু, ভারতের দালাল, পূর্ব বাংলাকে ভারতের অঙ্গরাজ্য বানানোর ষড়যন্ত্র করছে বলে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। সেদিনও ঠেকাতে পারেননি আওয়ামী লীগের বিশাল বিজয়।

স্বাধীনতার পর থেকেও মানুষকে বিএনপি জামায়াত কর্তৃক বুঝানো হচ্ছে 'আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে ভারতের কাছে বিক্রি করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে'!
অথচ বাংলাদেশ এখনও বাংলাদেশই আছে। তিল পরিমাণ জায়গা ছাড়েননি, বরঞ্চ বাংলাদেশের মানচিত্রে আয়তন (নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতের (পিসিএ) রায়ে বিরোধপূর্ণ সমুদ্র সীমানার ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটারের অধিকার পেয়েছে বাংলাদেশ। আর, ছিটমহলের ১৭ হাজার ১৬০ দশমিক ৬৩ একর ভূখণ্ড বাংলাদেশের মালিকানাভুক্ত হয়।) বাড়িয়েছে আওয়ামী লীগ'ই।

আওয়ামী লীগ ভারতের কাছে বাংলাদেশ বেচেনি, বরঞ্চ অধিকার আদায় করতে সফল হয়েছে, যা বিগত কোন সরকার করতে পারেনি, এই সরকার তা সুন্দর সসুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেছেন, যাতে কোনপ্রকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেনি, আওয়ামী লীগের এই সফলতা কোনপ্রকার সমালোচনা ছাড়াই।

ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্য আদায় যতটুকু তার সবটুকুই আওয়ামী লীগের অবদান। বাংলার মানুষ বুঝে গেছে কে গোলামী করেছিল ভারতের।

কথায় কথায় বাংলাদেশে উন্নয়ন নিয়ে ঠাট্টাতামাসা করেন, স্বীকার করতে কষ্ট লাগে বা আপনাদের স্বভাবদোষ আওয়ামী লীগের উন্নয়ন ঢেকে রাখার ব্যর্থ চেষ্টা করা। তবে আকাশের সূর্যকে মেঘ সাময়িক আড়াল করতে পারলেও সূর্যের আলো ঢেকে রাখতে পারেনা। তেমনি যতই ঠাট্টাতামাসা করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের দেশপ্রেম দেশের উন্নয়নেই প্রকাশ পেয়ে চলছে, পাবেই। আসেন এক নজরে দেখে নেই আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক বাংলাদেশ ও জনগণের প্রাপ্ত উন্নয়নমূলক কিছু......

বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, প্রসবকালীন মৃত্যু হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, বৈশাখী ভাতা, ফেয়ার প্রাইজ কার্ড, ডিজিটাল করণ, ফাইবার অপটিকে বাংলাদেশকে যুক্তকরণ, পদ্মা সেতু, ফ্লাইওভার নির্মান, মেট্রোরেলের কাজ শুরু, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মান, বিনামূল্যে বই বিতরন, উপ বৃত্তি প্রদান, স্কুল-কলেজ ও মসজিদ মাদ্রাসা নির্মাণ, গ্রামীন রাস্তাঘাট উন্নয়ন, ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক, বিনোদন কেন্দ্র নির্মান, রাজাকারের বিচার, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমন, মাদক ও  দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ,  জেলেদের খাদ্য সহায়তা, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, মোবাইলের গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি, ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি, স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, দারিদ্র্যতার হার নিম্ন পর্যায়, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, মাতৃত্বকালীন ছুটি বৃদ্ধি, জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধি, শিশু মৃত্যু হার রোধ, পোষাক রপ্তানিতে বিশ্বে ২য় স্থান দখল, সমুদ্র সীমা জয়, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ বৃদ্ধি, খাদ্য উদ্বৃত, রাজস্ব বৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, খেলাধুলায় উন্নতি, নারীর ক্ষমতায়ন ও মর্যাদা বৃদ্ধি,   ভারতের সাথে  দীর্ঘ দিনের অমিমাংসিত  ছিটমহল সমস্যার সমাধান, পার্বত্য শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দান,  ২১ শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া, ৭ই মার্চের ভাষণ ওয়াল্ড হেরিটেজ ডকুমেন্ট রেজিস্ট্রারে স্হান পাওয়া, মহাকাশে  বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রেরন, দেশকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত করা,  ইত্যাদি ইত্যাদি।

এগুলো যদি আপনার কাছে দেশ জনগণের প্রাপ্য না মনে হয় তাহলে আপনি কতটুকু পুরু টিনের চশমা পড়ে আছেন তা আপনিই জানেন।

আপনাদের ভাষ্যমতে বিএনপি তো ভারতের গোলামী করেনি, তবুও ভারতের কাছে বিএনপিই বাংলাদেশের স্বার্থ ছেড়েছে বহুবার, তার মধ্যে একটা বলি, জাপানি গাড়ি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ছিল কেবল মাত্র ভারতের সুজুকি মারুতি নামের সস্তা মানের গাড়ির এদেশে এক চেটিয়া মার্কেট পাইয়ে দেয়ার জন্যই, আর ফাইবার অপটিক সংযুক্তির অফার ফেরত দিয়ে ভারতকে পাইয়ে দেয়ার কথা তো আপনার জানার বাহিরে থাকার কথা নয়। এছাড়াও টাটা কোম্পানির জন্য ১০% রাষ্ট্রীয় শেয়ার নিজের বন্ধুর কোম্পানির নামে দাবী করার কথাও এখন জনগণ জেনে গেছে। গ্যাস দেয়ার চুক্তি করে ক্ষমতা বহাল রাখার কথাও চাপা নেই ভাইজান।
'হাওয়া ভবন' নামে দ্বিতীয় '১০% সংসদ'-এর কথা চেপে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন, জনগণ সব জেনে গেছে।

বলবেন তিস্তা পানি চুক্তির বাস্তবায়ন করতে ব্যর্থ? এই ব্যর্থতা কিন্তু বিএনপি জাতীয় পার্টিরও। এটা ভারতের একান্তই নিজস্বতা, তাদের স্বার্থ তারা ছাড়বে কেন? তবুও জননেত্রী শেখ হাসিনা অনেক চেষ্টা করেছেন/ করছেন, এটাতেও সফল হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।

এই তিস্তাচুক্তি করতে ভারত সফরে গিয়ে দেশে ফিরে বলেছেন, 'ও হ! মনেই ছিল না তিস্তা পানি চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করার'!! হা হা হা আমাদের দুর্ভাগ্য এমন একজন নেত্রী এদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

সবশেষে, হিংসা প্রতিহিংসা ছেড়ে, দেশের জন্য রাজনীতি করেন, দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য কাজ করেন, জনগণ ঠিকই খুঁজে নিবে আপনাদের। মিথ্যা আর ভুল প্রচার করে বর্তমান জনগণকে আর বোকা বানাতে পারবেননা ভাই, বর্তমান জনগণ ঠিকই বুঝে কাদের মাধ্যমে দেশ জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন সম্ভব। আপনি স্বীকার না করলেও বিশ্ববাসী ঠিকই দেখছেন, বুঝছেন।

আসুন, দলমত নির্বিশেষ আমরা দেশকে ভালোবাসী, দেশের জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের চিন্তা করি, গড়ে তুলি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।

আমি গর্বিত আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমর্থক

আমি গর্বিত আমি মুসলমান, আমি গর্বিত আমি বাঙালি, আমি গর্ববোধ করি আমি বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলাম।

আমার হৃদয়ের বিনম্র শ্রদ্ধা-ভক্তি দিয়ে স্বরণ করি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান'কে, যিনি আমাকে মুক্ত স্বাধীনভাবে চলার যোগ্যতা অর্জন করে দিয়ে গেছেন, যার জন্ম হয়েছিল বলেই বাঙালি জাতি পেয়েছিল শোষনের হাত থেকে মুক্তি, যিনি উপহার দিয়ে গেছেন মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ। ইতিহাসের মহানায়ক, মুক্তি স্বাধীনতা যুদ্ধের অবিসংবাদিত নেতা মহান শেখ মুজিবুর রহমান, এই অভিনব ইস্পাত সমান দৃঢ চিত্তের মানুষটি আমাকে সদাই ভাবিয়েছে- তার আদর্শ আমাকে শিখিয়েছে দেশ প্রেম, নেতৃত্ব ও বাঙ্গালীর চেতনা। তাকে তো মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রেখে যাবো আমার হৃদয়ের জায়নামাজে।

১৭৫৭ সালের ২৩ জুন বাংলার আকাশ থেকে স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। সেই সূর্য উদিত করতে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়মী লীগের জন্ম। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে আওয়ামী লীগ ও শেখ মুজিবের ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আওয়ামী লীগ বাঙালি জাতির ও দেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে বলিষ্ঠতার সহিত নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে।

'৪৯ সালে জন্মের পর আওয়ামী লীগের শত শত নেতাকর্মীরা কারনে-অকারনে কারাবরণ করেছে, অত্যাচার নির্যাতনে অনেকে পরপারের বাসিন্দা হয়েছেন। ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সকল মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনায় জাতি গঠনে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কাজ করে আসছেন। বঙ্গবন্ধু তথা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন-সার্বোভৌমত্বের দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।

৫২ এর ভাষা আন্দোলন, '৫৪ তে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, '৬৬-এর ছয় দফাসহ প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে আওয়ামী লীগ অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছে। আওয়ামী লীগের ইতিহাস বাঙালি জাতির অর্জনের ইতিহাস, ত্যাগ-তিতিক্ষার ইতিহাস।

যে মহান নেতার জন্য আমরা বাঙালি জাতি এত কিছু পেয়েছি, যেই মানুষটি দেশের মানুষকে ভালবেসে সারাটি জীবন সবকিছু বিসর্জন দিলেন তাকে আমরা বাঙালি জাতি হিসেবে, বাংলাদেশি হিসেবে কি দিতে পেরেছি? শুধুই লাঞ্ছনা। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে শেখ মুজিব হয়ে যায় রাজাকার আর বাঙালি জাতির কলঙ্ক বাংলাদেশের জাতীয় বেঈমান জিয়াউর রহমান হয়ে যায় স্বাধীনতার ঘোষক, শেখ মুজিবের ছবির জায়গাতে উঠে আসে জিয়ার ছবি। এই কি তাহলে আমাদের প্রতিদান?

আওয়ামী লীগ উপমহাদেশের প্রাচীনতম দল গুলোর মধ্যে একটি। জাতির পিতাকে হত্যার পর ইয়াহিয়া ইস্টাইলে আওয়ামী লীগ নিধন শুরু করেছিল মেজর জিয়া! শত প্রতিকূলতার মাঝেও আওয়ামী লীগ টিকে আছে, থাকবে। কোন জঙ্গি নেত্রীর জঙ্গিবাদকে আওয়ামী লীগ ভয় করে না। বঙ্গবন্ধুর মত মহান ব্যক্তিত্বের আদর্শের উপর ভিত্তি করে যে দল প্রতিষ্ঠিত সে দলকে কেউ ধ্বংস করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।

শত প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাছ্ছেন গণতন্ত্রের মানসকন্যা দেশপ্রেমী নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহনের পর থেকে দেশের উন্নয়নে আদর্শ, নীতি, অসাম্প্রদায়িকতা, ভবিষ্যৎ দৃষ্টি, দেশ ও জনগণের প্রতি মমত্ববোধ, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের প্রতি অঙ্গীকার, সার্বোভৌমত্বের প্রশ্নে অটল অবস্থান এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া ও নিম্নআয়ের বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নিত করার জন্য নিরন্তর কাজ করে যাছ্ছেন। আজ বাংলাদেশ সর্বক্ষেত্রে সয়ংসম্পন্ন, বিশ্বের দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল। জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ও তার আইটি উপদেষ্টা সুপুত্র দেশের ভবিষ্যৎ সুযোগ্য রাষ্ট্রনায়ক সজীব ওয়াজেদ জয়'এর হাত ধরে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে মাথা উচু করে দাড়াতে সক্ষম হয়েছে।

তাই উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে, জননেত্রী শেখ হাসিনা'র হাতকে আরও শক্তিশালী করতে 'বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ'-এর সাথেই থাকুন।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। জয় হোক এদেশের গরীব-দুঃখী মেহনতি মানুষের। পরিবর্তনের অগ্রদূত ডিজিটাল ও স্বাবলম্বী বাংলাদেশের রূপকার দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা'র হাত ধরেই বিশ্ব-দরবারে বাঙালি মাথা উঁচু করে দাঁড়াক।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন