তুমি ছিলে না...!
গ্রীষ্মের ভ্যাপসা গরমে- যখন উদাস-দুপুর,
অস্থির জনমন, পথিকের বুকে এক-সমুদ্র তৃষ্ণা!
ছোট্ট অবুঝ শিশুটি
মাটির শীতলতা শুষে নিবে বলে-
শুয়ে আছে ধুলো-মাখা পথে গাছের ছায়ায়! পাখি'রা সব ডালে ডালে ছাড়ছে দীর্ঘশ্বাস!
একটু তৃপ্তির খুঁজে হাঁটতে হাঁটতে,
তোমাকেই দেখবো বলে সেদিন
দাঁড়িয়ে ছিলাম তোমার আঙিনায়।
তুমি ছিলে না বাড়ি...!
তোমার ছোটবোন এসেই
হাতটি ধরে বলছে-ভিতরে আসেন দুলাভাই,
ভালো হবে ঘরে দুজন বসেই বলবো কথা,
চলেন তাড়াতাড়ি ভিতরে যাই,
আমি ছাড়া কেউ নাই বাড়ি আজ ফাঁকা,
কতই খুশি হয়েছি আজ আপনাকে পেয়ে
কিভাবে বুঝাই ও দুলাভাই...!
বিশ্বাস করে চলেন ঘরে সোহাগ দেখাই।
আমার বুকজুড়ে ধুকপুক ধকধক
চলছিল দ্রুত হার্ড-বীট রক্তচাপ,
অবুঝ শিশুটির মতো নির্বোধ, ছিলাম-
ক্লান্ত এক পাখি, বুকে এক-সমুদ্র তৃষ্ণা!
ফাঁকা বাড়ি, ঘরে শুধু আমি আর সে
নিজ হাতে দুধভাত দিচ্ছে তুলে মুখে,
ভয় আর মুগ্ধতায় অস্থির আমার হিয়া!
হবু শালীর আন্তরিক আদর আর
দুঃসাহসী ভালোবাসা দেখেছিলাম ও'চোখে!
মুগ্ধনয়ন অবাক !
মনে মনে তোমাকে বলছিলাম-
দুঃখ আর বিরহ কষ্টে পুড়া হৃদয়ের
কিছু আক্ষেপ কিছু বেদনা...! মিনতি!
তুমি যদি একটু সাহসী প্রেম দিতে অবিরত,
কোন কষ্ট হতো না আমার বিরহে পুড়তে,
বেদনা'রা ভাসাতে পারতোনা- শ্রাবণ ঝড়ে,
পুড়তাম না ইচ্ছে গুলোর দীর্ঘশ্বাসে প্রতিনিয়ত।
সহজেই বোঝতে আমার দুঃখ স্বাদ!!
কতদিন...! কতভাবে
মাড়িয়েছি তোমার বাড়ির আঙিনা! তুমি
ভিতরবাড়ি থেকেই ডেকে উঠতে
ছোট ভাইয়ের নাম ধরে ধরে,
আমি মুগ্ধ মনে ফিরতাম- সে কণ্ঠ শুনেই!
কখনো-বা পর্দা'টা সড়িয়ে
দরজায় দাঁড়িয়েই বলতে- মরার বিড়াল...!
মুগ্ধ চোখে দেখাতাম তোমাকে।
চলার পথে এক পলক সেই দেখা-
সামান্য কণ্ঠ শুনার জন্যই'যে কতদিন
ফিরে এসেছিলাম না-দেখে, কথা না-শুনে!
তার হিসাব আমি কখনো রাখিনি...।
ফিরেই লিখতে বসতাম প্রেমের কবিতা,
তোমাকে দিবো বলে...। লম্বা খাতার
পাতাটির এপিট-ওপিট ভরে দিতাম-
বিরহে দগ্ধ যতো ছিল স্বাদ ইচ্ছা।
মনের গভীর থেকে তুলে দেয়া
বেদনার সেই পঙক্তি-গুলো! বুঝেও...
এসে বলতে- বুঝি না তোমার সাহিত্য কথা!
তাই, ভালোবাসা দিয়ে যতনে সাজানো
আমার স্বপ্ন গুলো সব, অপূর্ণই রয়ে যেতো!
কতই'না মধুরতা আর মমতায়,
সাহসী ভালোবাসা'র ছাপ রাখলো আজ!
তুমি এতদিনে-ভিতরেই নিতে পারলে না,
ছোটবোন সেখানে তোমার বিছানায় বসিয়েই,
আদর করে মুখে তুলে খাওয়ালো দুধভাত...!!
------
তুমি আসো'নি সেদিন...!
তোমাকেই খুঁজতে গিয়েছিলাম
সেদিন, বড় স্বাদ ছিল আমার মনে,
দু'চোখে সপ রঙিন স্বপ্ন'রা এসে
ভিড় করছিল খুব।
যখন তোমার কথা আমাকে বলছিল
তোমার ছোটবোন, তখন থেকেই কেমন যেন
আনন্দ আর উচ্ছাসে ভরে উঠছিল মনটা;
তোমার স্পর্শ পাওয়ার খুব ইচ্ছে করছিল
আশায় আশায় বেঁধেছিলাম এই বুক।
রঙিন স্বপ্ন গুলো আর দেখাতে পারিনি
তুমি আসো'নি সেদিন! পেয়েছিলাম দুখ।
দেখনি সেদিন! কখনো কি দেখেছিলে তুমি ?
কোন এক সকালে জেগে ওঠা কিশোর
সূর্যটাকে ঢেকে দেয়া, কালো
মেঘ আর বিজলীর গর্জনে হতভম্ভ দিক্বিদিক,
জনমনে শুরু হওয়া মহাপ্রলয়ের ভয়,
ডাহুকী'রা সব দূর বিলের ধারে দিয়েছিল ডুব।
অথচ! কিছুই হলো না....!
বিজলী'রা সপ মুহূর্তেই হারিয়ে গেলো,
মেঘেরা ভেসে ভেসে চলে গেল দূরে কোথাও,
আবারও সুন্দর সুনীল আকাশ- হাসতে
হাসতে পুব-আকাশে দেখালো সূর্যটা মুখ।
আমার ভিতরেও সেদিন বয়ে চলেছিল ঝড়!
মেঘের গর্জন আর বিজলীর বুকফাটা চিৎকারে
কেঁপে কেঁপে উঠছিল আমারও এই বুক,
যেন মুহূর্তেই চোখ ভাসিয়ে ঝরবে শ্রাবণধারা,
ভাসবে বুকের জমিন...
আমি বেদনায় সেদিন হয়ে ছিলাম চুপ!
দু'চোখের বৃষ্টি সেদিন
ঝরবে ঝরবে বলেও আর ঝরেই'নি। মন
আকাশের সব মেঘ জমেছিল চোখের পাতায়,
ঝাপসা হয়ে আসছিল আমার পৃথিবী!
তুমি আসো'নি সেদিন...! সারাদিন প্রতীক্ষার
প্রহর গুলো আর কিছুতেই মানছিল না বুঝ!
-------------
ভুল করেছিলাম!!
আমার ভালোবাসা ভুল পাত্রে জমা রেখেছিলাম,
সে কয়লা ভেবে পুড়িয়ে দিয়েছে। সেই পুড়া
ভালোবাসা'র আত্মচিৎকার মাঝেমধ্যে বেরিয়ে আসে,
কি করবো আটকাতে পারিনা যে কিছুতেই!! তাই
মন থেকে কাগজে নামিয়ে রাখতে চাই,
তাই যদি কষ্টের ভার কিছুটা কমে ....!!!
আমি চালাক থেকেও বোকা সেজে ছিলাম,
সে নির্বোধ ভেবে
আমার ভাগে কষ্টটাই বেশি দিয়ে গেছে,
আমি অবুঝ শিশুটির মতো
চুপচাপ মেনে নিয়েছিলাম। আমি তার সুখটাকেই
বেশি মূল্যবান মনে করেছিলাম, তাই
আমার সুখ পুড়ে যাওয়ার গন্ধ শুঁকেছিলাম নীরবে।
আমি ভুল করেছিলাম,
বড় ভুল করেছিলাম তাকে ভালোবেসে ....!!!!!
বিশ্বাস করেন,
আমার মনের গভীর থেকে বেরিয়ে এসছিল কথাগুলি,
তাই বলে ফেললাম আটকে না রেখে।। : নয়ন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন