শনিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৭

সামু ব্লগের আত্মিকতা, আমার কৃতজ্ঞতা


ব্লগ তো অনেক আছে। তাতে লিখে কে কেমন ফিড ব্যাক পান আমি ঠিক বলতে পারবো না! কারণ আমি আর কোথাও লিখি না। কিন্তু সামুর মতো আত্মিকতা আর কোথাও পাবেন না সেটা বলতেই পারি।"-- এটা একদম নিশ্চিত হয়েই বলা যায়। সামুর সকল লেখকই একটু বেশিই উদার প্রকৃতির, সহজেই একজন নতুন লেখককে উৎসাহিত করতে পারে লেখায়। এখানে সবার আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়ে অনেকেই আমার মতো সামুকেই উপযুক্ত মনে করেন নিজের লেখালেখি চালিয়ে যেতে। সামুর সকল সদস্যের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা সবসময় থাকবে এটা আমি নিশ্চিত হয়েই বলি।

আমি অতন্ত সাধারণ একজন মানুষ। লেখালেখির কোন অভ্যাস আমার ছিল না কখনো। তবে মাঝেমধ্যেই দুএক লাইন লেখার চেষ্টা করেছি সবসময়। সেই লেখা দু এক লাইনেই সীমাবদ্ধ থাকতো, এগুতে পারতো না। ঢাকাতে থাকতে যখন বাহিরে থাকতাম কোথাও বসে, পাশে পড়ে থাকা টুকরো কাগজে লিখতা দু এক লাইন। এরকম অনেক লিখেছি সিগারেটের কাগজে বা পড়ে থাকা টুকরো কোন কাগজে। কিন্তু কখনওই সম্পূর্ণ কিছু লিখতে পারতাম না। আসলে আর পারতামই না বেশি লেখতে, সাথে একটু অধৈর্য কাজ করতো। টুকরো কাগজগুলো কিছুদিন সংগ্রহে থাকতো মানিব্যাগের ভিতর, তারপর হারিয়ে যেতো।

আমি নেটের সাথে পরিচিত হয়েছি সাত সালে। কিন্তু সেটা ভিডিও ছবি দেখাতেই সীমাবদ্ধ থাকতো। তারপর প্রথম ফেসবুক আইডি খুলতে পারি এগারো সালে দুইশ টাকা খরচ করে। গানের সাথে খুব একটা ভালো সম্পর্ক আমার সেই ছোট থেকেই ছিল। কিন্তু সেটা গান শুনা ও মুখস্থ করে নিজে গাওয়া পর্যন্তই। তাল লয় কিছু বোঝতাম না কখনো। তো ফেসবুক একাউন্ট পেয়ে নিজের মুখস্থ গান গুলি লিখে রাখতে লাগলাম। কিন্তু দুই মাসের মধ্যেই সেই আইডি গায়েব, আর খুঁজে পাইনি। এরপর অনেক ফেসবুক আইডি আমার গায়েব হয়েছে, সাথে অনেক লেখাও। দুঃখ একটু সেই সব লেখার জন্য হলেও কিছু করার ছিল না। সর্বশেষ চৌদ্দ পনেরো সাল থেকে তিনটি ফেসবুক আইডি এখনো আছে। ব্যবহার করছি একটি। বাকি গুলি পরের চিন্তার জন্য রেখে দিয়েছি। প্রথম প্রথম শুধু ছবি পোষ্ট করলেও পরে কিছু লেখতে শুরু। তো, লিখতে গেলে কিছু পড়তে হবে। তাই, মাঝেমধ্যে কথা সার্চ দিয়ে পড়তাম। অনেকসময় লেখাটা খাতায় লিখে পরে ফেসবুকে লিখতাম। এই সার্চ দিয়েই পাওয়া সামুর একটা লেখা পড়ে নিজের কিছু মন্তব্য রেখে যাওয়ার চিন্তায় লেখি, কিন্তু হল না, দেখানো হল প্রথমে লগইন হতে হবে আমাকে। তারও পরে একদিন সামুতে একটা একাউন্ট খুলতে সক্ষম হই বেনামে। লিখতে থাকি বিভিন্ন লেখকের কবিতা পোষ্ট পড়ার পাশাপাশি। কিন্তু কেমন যেন অতৃপ্তি লাগে বেনামে লেখালেখি। তাই পাশাপাশি সেই মাসেই নিজের পুরো নাম দিয়ে এই নিকটা খুলে রাখি। কিন্তু তিন দিনের পর্যবেক্ষণের ঝামেলায় পড়ে একটা পোষ্ট দেওয়ার পর আর এই নিকে ঢোকা হয়নি। অন্য নিকে লেখা চলে। সবার আন্তরিকতা আমার লেখার আগ্রহটা বাড়তেই থাকে। হোক না হোক লিখে ব্লগে রাখতাম। অনেকের উৎসাহ আমাকে সারাজীবন মনে রাখতেই হবে। তাঁদের আন্তরিক উৎসাহের জন্যই আমার লেখার আগ্রহটা এখন বেশিই। হোক না হোক লিখতে ভালো লাগে।

এবছরের জানুআরিতে আমার এই নিকের কথা মনে হয়। সার্চ দেই নিজের পুরো নাম, এবং পাই এই নিকটি। তারপর পাসোয়ার্ড চেঞ্জ করার মাধ্যমে ঢোকে দেখি আমাকে প্রথম পাতার সুবিধা দেওয়া হয়েছে। খুব খুশি তখন। সেদিনই আনন্দটা সবার সাথে শেয়ার করি। সেই থেকে সবার আন্তরিক উৎসাহ আমার আগ্রহটাকে অনেক বাড়িয়ে লেখতে প্রেরণা যোগায়। মানসম্মত কিছু লিখতে আমি পারিনা, সেটা আমি নিজেও বুঝি। তবে যেটুকু লেখছি এই সবই সামুর জন্য সামুর সকল উদার প্রকৃতির লেখকদের জন্যই সম্ভব হয়েছে। আমি যতদিন লেখার জগতে থাকবো সামু আর সামুর সকল ভাইদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা থাকবে। থাকবে সবার জন্য আমার আন্তরিক ভালোবাসা। 

সামুতে আমার কাছে বেশি যে দিকটা পছন্দ, তা হলো- এখানে একটা লেখা শেয়ার করলে সেই লেখার ভুলগুলো শুধরে নেয়া যায় বড় ভাইদের কাছ থেকে। অনেক বড় ভাই আছেন আমাকে আমার ভুল গুলো ধরিয়ে দিয়ে শুধরানোর সুযোগ করে দেন। দিয়ে যান অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শও। এরচেয়ে বেশি একজন নতুন লেখকের পাওয়া আর কি হতে পারে! আমি সেই সব আন্তরিক মন্তব্যে সবসময় কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার শ্রদ্ধা বেড়ে যায় তাঁদের প্রতি। এই তো সামুর ভালোবাসা, আন্তরিকতার প্রয়াস।

এভাবেই আন্তরিকতা নিয়ে এগিয়ে যাক সামু ব্লগ অনন্তকাল বাংলাকে সাথে করে।
শুভ প্রত্যাশা সবার জন্য।

(নীলপরি আপুর পোষ্টে বলা আমার মনের কথাগুলো।)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন